শুক্রবার, ১৭ মার্চ, ২০১৭

রোজভ্যালির এজেন্ট হওয়ার আর বর্তমানের অবস্থার নির্মম কাহিনী পড়ুন,

আজ আপনাদের বলবো এক এজেন্ট কাম
ডিপোজিটরের কাহিনী ,নাম-( নীল )
হতেও পারে আপনার জীবনের ঘটনার সঙ্গে মিল,
ভারতের এক প্রত্যন্ত গ্রামের গরিব, গরিবদের মধ্যে মধ্যবিত্ত, একদিন হঠাত্
প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্রাম তচনচ হয়ে গেলো
আর গ্রামের মানুষ জন গ্রাম ছাড়তে
আরম্ভ করলো,

আর ওইসময় ভারতের
বিভিন্ন রাজ্যে অর্থ লগ্নি সংস্থার এজেন্ট দের রমরমিয়ে টাকা তোলা চলতো ,
তার ব্যাতিক্রম ছিল না পশ্চিমবঙ্গ ও
ওই সময় নীলের চরম আর্থিক সংকটের
জন্য তখন ভাবতে লাগল সংসার কি
ভাবে চালানো যায় , যদি মাসে অন্তত
এক দেড় হাজার টাকা মিলে যায় তো
কোনও সমস্যাই থাকবে না সংসার চালানো,
তবে নীলের আর্থিক সংকট থাকলেও,
সংসারে একবেলা খেয়ে পরে মানসিক সুখ টুকু ছিল ।
ব্যাস এক পুরনো এজেন্টের সহযোগিতায় , রোজভ্যালির এজেন্ট হয়ে
গেল আর বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মাত্র
90-100- 200 টাকা করে মাসে মাসে কোম্পানিতে জমা করিয়ে ,
প্রথম কমিশন 36 টাকা , পর 500-1000
টাকা করে পেতে থাকলো , কিন্তু মনের
মধ্যে কিন্তুবোধ ছিল ঠকে যাওয়ার বা
প্রতারনার, না খুবই বিশ্বাস হয়েছিল
কোম্পানির অফিস গুলো তে যখন দেখতো, ভারতীয় রাষ্ট্রপতি দের কোম্পানির মালিক কে দেওয়া পুরস্কারের

ছবি , আর বিভিন্ন বড়ো বড়ো নেতাদের
সঙ্গে চিটফান্ড মালিক দের,বিভিন্ন নামিদামি প্রভাব শালি ব্যাক্তিদের অসংখ্য ছবি ,
আর বিভিন্ন থানার সামনে বড় বড়
অফিস খুলে মাইক দিয়ে, শতশত সংবাদ
মাধ্যমে টিভি চ্যানেল গুলো তে গলা
ফাটিয়ে চিত্কার করে টাকা তুলতো ,

টাকা তোলার কথা বলতো , সরকারি
অনুমতি পত্র দেখে আর লক্ষ কোটি মানুষ
দিনের পর দিন টাকা জমা দিত,
তা দেখে মনে হতো, যদি এগুলো ভুয়ো কোম্পানি হতো তাহলে, মন্ত্রী শান্ত্রি লক্ষ কোটি মানুষ তো ছুটতো না এর পেছনে

, ভারতীয় প্রশাসনের লোকজন ও তো চুপ থাকতো না , বুকে বল পেতাম মনে নানা ভয় , এতো বছর ধরে চলা অর্থ লগ্নি সংস্থাতে
প্রতারিত হওয়ার ভয় কেটে যেত ।
নতুন উদ্যমে আবার টাকা তোলার কাজ
চলতো , নিজেও কোম্পানির থেকে
পাওয়া কমিশনের কিছু, আর জমানো কিছু , নিকট আত্মিয় দের থেকে ও টাকা
নিয়ে জমা দিত ওইসব কোম্পানি গুলো
তে ,
দু একবার টাকা ম্যাচুরিটি ও পাওয়া গিয়ে
ছে কোম্পানির থেকে ,
এজেন্ট হয়ে টাকা ইনকামের জন্য ভারত
সরকার ট্যাক্স ও নিতো , ট্যাক্স রিটার্ন ও
পাওয়া যেত,
মনটা ভরে যেত সহজে কত সম্মানের
সঙ্গে কাজ করছি ভেবে ,
অনেকে তো সংসারে একটু সচ্ছলতার
জন্য চাকুরি না পেয়ে এজেন্ট হয়েছিল ।

অনেক কোম্পানির সচ্ছল এজেন্ট রা
টাই কোর্ট পরে দামি বুট সুট দামি মটর
সাইকেল, চারচাকা চড়ে টাকা তুলতো
তখন তাদের মতো হওয়ার স্বপ্ন দেখতো
নীল'কবে যে এমন হবো ।
অনেক এজেন্ট চাকরি না পাওয়ার স্বাদ
পেত এখানে ।

না তা আর হয়ে ওঠা হয়নি নীলের ।
হঠাত্ করে একদিন, সেই গ্রামের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতোই সব স্বপ্ন ভেঙে
তচনচ হয়ে গেল,
যে দিন শুনলো সমস্ত চিটফান্ড কোম্পানি নাকি ভুয়ো,
তখন থেকে অসুস্থ
হয়ে পড়লো, ষ্টোক হার্ট ফেল কি জিনিস
বুঝতাম না, কিন্তু তখন শরীরের মধ্যে
যে ক্রিয়া বিক্রিয়া গুলো হতে লাগলো
তখন মনে হতে লাগলো এই বুঝি
মারা যাচ্ছি , ডাক্তার বাবুকে সমস্যার
কথা খুলে বলতেই বললেন এই লক্ষণ
গুলোই নাকি ওই সব মারাত্মক রোগ ।

পরে পরে হাঁসি খুশি জীবনটা বদলে গেল, এক মুমূর্ষু রোগীর ন্যায় , এখন মনে সুখ শান্তি সব চলে গেছে।
নিজের, আত্মিয় বন্ধুর, পাড়াপড়শির অনেক টাকা তুলে কোম্পানিতে দিয়েছি
তাদের কটুবাক্য, কারও বা বুকফাটা হাহাকার শুনে বাড়ির থেকে বেরনো বন্ধ করে দিয়েছে নীল।

মাঝে মাঝে আমানতকারীদের চাপে বাড়ি থেকে গোপনে ঘুরে বেড়াতে হয়
ফাঁকে ফাঁকে।
মাঝে মাঝে মনে হয় আত্মঘাতী হই,
কিন্তু মনটা কে শক্ত করে ভাবি যদি
অলৌকিক কোনও শক্তি থাকতো তাহলে এই ভারতীয় নেতা মন্ত্রী প্রশাসন নোংরা বিচার ব্যবস্থাকে পদদলিত করে ,
দু হাতে নির্মম ভাবে ধংস করে দিতাম,

নাঃ হয় না , পারিনা আমাদেরি তৈরি করা শক্তি দিয়ে আমাদের কেই দুর্বল করে শোষণ করছে এই ভারতীয় প্রশাসন,
কি আর করবো মাঝে মাঝে ভাগ্য কে
দোষ দিই আর ভাবি কবে যে টাকা পাবো
আর অভিশাপ দিই ভারতীয় নোংরা প্রশাসনের লোকজন দের যারা গরিব এজেন্ট আমানতকারীদের টাকা দিতে দিচ্ছে না, সুখশান্তি সব ছিনিয়ে নিয়েছে,

হা ভগবান ওরা আর ওদের পরিবারের লোকজন যেন নির্মম ভাবে গাড়ি চাপা পড়ে ট্রেনে কাটা হয়ে প্লেন একসিডেন্ট হয়ে , বিশাক্ত সাপের ছোবলে , হার্ট ফেল হয়ে , মুখ দিয়ে গলগল করে কাঁচা রক্ত
ওঠে মরে যেন চরম ভাবে মৃত্যু হয় ওদের ।
দুর্বল দের তো অভিশাপ,  আর চির রোগী দের, ভগবান ছাড়া কেউ নেই ।

আচ্ছা বলুন তো এই চিটফান্ড কান্ডের
জন্য ভারতীয় সমস্ত প্রশাসন, কেন্দ্রীয় রাজ্য সরকার দ্বায়ী নয় কি  ?

এদের কি অভিশাপ প্রাপ্য নয় ,
অবশ্যই সাহসী হলে  উত্তর দেবেন,

          এই ঘটনা আমার নিজের,
এইঘটনার সঙ্গে কারও মিল থাকলে বলবেন । ভয়, কান্না , আর আত্মঘাতী হওয়া টা মুর্খের কাজ,
এই অবস্থার মোকাবিলা করাই বুদ্ধিমানের কাজ, বুদ্ধি দিয়েই এদের শাস্তি দিতে হবে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

রোজভ্যালি চিটফান্ড কোম্পানির টাকা ফেরতের অর্ডার কপি ২০২৩ সারা ভারতবর্ষের জন্য

রোজভ্যালি চিটফান্ড কোম্পানির টাকা ফেরতের অর্ডার কপি ২০২৩ সারা ভারতবর্ষের জন্য  আমানতকারীদের জন্য যে শেষ অর্ডারটা হয়েছে এবং এই এডিসি ডিসপোজা...

A